
প্রকাশিত: Wed, Dec 21, 2022 4:16 AM আপডেট: Wed, Jul 2, 2025 2:43 AM
আরবরা কিছু একটা পরলেই সেটা ইসলামিক হয়ে যায় না
মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহা
কোন জিনিসটা ইসলামিক, আর কোনটা অ্যারাবিকÑ এই পার্থক্যটা অনেকেই করতে পারেন না। ফলে একদিকের মানুষ অতিরিক্ত আবেগ দেখায়, অন্যদিকের মানুষ দেখায় অপ্রয়োজনীয় ঘৃণা। এক হুজুর দেখলাম মেসির গায়ে ‘মসজিদে হারামের ইমামের মতো পোশাক’ পরিয়ে দেওয়ায় খুবই দুঃখ পেয়েছেন। অথচ বাস্তবে এই পোশাকের সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা জাস্ট ওই অঞ্চলগুলোর স্থানীয় আরব কালচার। ইনফ্যাক্ট ইহুদীরাও এরকম ড্রেস পরতো বলে জানা যায়।
আরবরা কিছু একটা পরলেই সেটা ইসলামিক হয়ে যায় না। যদি হতো, তাহলে আরবের বিভিন্ন এলাকার মহিলারা ঘরোয়া বা ফিমেল-ওনলি পার্টিতে ঐতিহ্যবাহী উজ্জ্বল লাল-হলুদ বর্ণের যেসব রঙিন জামা পরে, সেগুলোই ইসলামিক পোশাক হতো, হিজাব হতো না। অ্যারাবিক পোশাক বনাম ইসলামিক পোশাক কনফিউশনের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে ‘কেফিয়্যাহ’, যেটার ভ্যারিয়েশনগুলো শেমাঘ বা ঘুত্রা নামেও পরিচিত। ছবিটা এডিটেড, ফর অ্যাটেনশন অফকোর্স, বাট সেখানে যে হেডস্কার্ফটা দেখতে পাচ্ছেন, ওটাই কেফিয়্যাহ।
কেফিয়্যাহ্ বিভিন্ন রূপ চালু আছে। সাদা-কালোগুলো ফিলিস্তিনে জনপ্রিয়, শুধু সাদাগুলো উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলোতে, এবং লাল-সাদাগুলো শুধু সৌদি আরব এবং জর্ডানে। এই লাল-সাদা কেফিয়্যাহকেই সাধারণত শেমাঘ বলা হয়।
বিচ্ছিন্নভাবে কেফিয়্যাহ আরবের অনেক দেশেই চালু ছিলো। ফিলিস্তিন এবং ইরাকের দিকে একটু বেশিই চালু ছিলো। কিন্তু সেগুলো ছিলো প্রধানত সাদা অথবা সাদা-কালো। পরবর্তী সময়ে ফিলিস্তিনে সাদা-কালো রং একচেটিয়াভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে প্রধানত ইয়াসির আরাফাতের কারণে। কিন্তু জর্ডান এবং সৌদি আরবে লাল-সাদা রং কেন জনপ্রিয় হয়? জ্বী, ঠিক ধরেছেন। ব্রিটিশদের কারণে। অতীতেও অবশ্য সৌদি আরব এবং জর্ডানে নেতৃস্থানীয় অনেককে এ ধরনের কেফিয়্যাহ পরতে দেখা গেছে, কিন্তু জনসাধারণের মধ্যে এর ব্যবহার ছিল খুবই সীমিত। ব্যাপকভাবে এটার প্রচলন ঘটান ‘ট্রান্সজর্ডানের বেদুইন ডেজার্ট ফোর্স’-এর প্রতিষ্ঠাতা, ব্রিটিশ অফিসার, স্যার জন ব্যাগট গ্লাব তথা গ্লাব পাশা।
মূলত ‘আরব জাতীয়তাবাদ’ প্রজেক্টের অংশ হিসেবে আরবের বিভিন্ন গোত্র থেকে আগত বেদুইনদের মধ্যে একত্ববোধ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যেই তিনি এই কেফিয়্যাহকে তার অধীনস্থ বেদুইন সেনাবাহিনীর ইউনিফর্মের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন। সে সময় ডেজার্ট ফোর্সে এবং আরব লেজিয়নে যোগ দিতে পারাকে মর্যাদার বিষয় হিসেবে গণ্য করা হতো। ফলে লাল-সাদা কেফিয়্যাহ ধীরে ধীরে জর্ডানে সামাজিক মর্যাদার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।
সাধারণ জনগণের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য ব্রিটিশরা জাহাজে করে এই শেমাঘ ইম্পোর্ট করে বিতরণ করে শুরু করে। এখনো জর্ডানের রাজপরিবারের সদস্যদের এই ধরনের কেফিয়্যাহ পরিধান করতে দেখা যায়। জর্ডানের বাইরেও ফিলিস্তিন এবং সৌদি আরবেও এই লাল-সাদা কেফিয়্যাহ তথা শেমাগ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বাংলাদেশের অনেক সৌদি আরব-ফেরত হুজুর এই লাল-সাদা হেডস্কার্ফ পরিধান করেন বলে অনেকেরই ধারণা এটা বুঝি ইসলামিক পোশাক এবং সে কারণে পবিত্র। কিন্তু বাস্তবে এর সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং সম্পর্ক আছে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার। ফেসবুক থেকে
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
